বন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া, গেঞ্জিতে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা

ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) :

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে সাগরদীঘি ইউনিয়নে জোড়দীঘি গ্রামের সোহরাব হোসেন (৩০) ও শহরগোপীনপুর গ্রামের কায়সার আহমেদ (২৮)। পেশায় দু’জনই কাঠমিস্ত্রি। দু’জনের পেশা একই থাকায় বন্ধুত্ব হয় তাদের মধ্যে। দু’জনই বিবাহিত। বন্ধুত্বের সুবাদে দুই পরিবারের মধ্যে গড়ে ওঠে সুসম্পর্ক। একজন আরেকজনের বাড়িতে হর-হামেশাই যাতায়াত করতেন। অবশেষে বন্ধুত্ব স্থাপনই অশান্তি ডেকে আনে সোহরাবের পরিবারে। ঘনঘন যাতায়াতের কারণে একপর্যায় সোহরাবের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে কায়সারের। সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় প্রেমিকার ঘরের পেছনে গিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন কায়সার। মৃত্যুর আগে গায়ে পরিহিত গেঞ্জিতে কায়ছার লিখেছেন ‘তর কারণে আজ আমার এই অবস্থা, তুই ভাবিসনা শান্তি পাবি তুই।

তরা মা মেয়ে মিলে ভালো ......।’ এর পরের লেখা বোঝা যায় না। বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি ইউনিয়নের জোড়দীঘি গ্রামে।  সোহরাবের প্রতিবেশীরা জানায়, কায়সার আহমেদের বাড়ি থেকে তার বন্ধু সোহরাব হোসেনের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। দু’জনের আয়ের পথ একই হওয়ায় বন্ধুত্ব হয়।

 বন্ধুত্বের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। জোড়দীঘি বাজারে কাঠের দোকান রয়েছে কায়সারের। এরই মধ্যে কাঠমিস্ত্রির কাজ বাদ দিয়ে সোহরাব চলে যান প্রবাসে। বাজারের পাশেই সোহরাবের বাড়ি হওয়ায় বন্ধুর বাড়ি যাতায়াত বেড়ে যায় কায়সারের। সাত মাস আগে দেশে আসেন সোহরাব। দেশে আসার পরপরই তার স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে যান কায়সার। স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, বন্ধুত্বের সুবাদে সোহরাবের স্ত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে কায়সারের। কায়সার নিজেও বিবাহিত। কায়সার বন্ধুর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে যান। তিনদিন থাকার পর আবার সোহরাবের বাড়িতে চলে আসেন তার স্ত্রী। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে সোহরাবের শ্বশুর এসে মেয়েকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। 

ছেলেসন্তানের দিকে তাকিয়ে পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধান করে পুনরায় ঘর-সংসার শুরু করেন সোহরাব। তিনি আরও জানান, সোহরাবের ঘরের পেছনের দিক দিয়ে হাঁটার পথ চলে গেছে। সেই পথ দিয়ে ভোরে স্থানীয় লেবু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বাজারে যাওয়ার সময় কাঁঠাল গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় কায়সারকে দেখতে পান। তার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে লাশ নিচে নামান। পরে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ থানায় নিয়ে যায়। সাগরদীঘি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (তদন্ত) ভিক্টর ব্যানার্জি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা আত্মহত্যা। নিহতের গায়ে পরিহিত গেঞ্জিতে একটি সুইসাইড নোট লেখা আছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে আসল রহস্য বের হয়ে আসবে।